top of page

[SATIRE] বাঙালি ও নিউটন

Updated: Mar 29, 2024

আচ্ছা, আইজ্যাক নিউটন কি বাঙালি ছিলেন?

 

প্রচুর খোঁজাখুঁজি করলে এরকম কোনো theory যে একেবারে কোথাও পাওয়া যাবে না, সে কথা অবশ্যই জোর দিয়ে বলা যায় না। কারণ আমাদের বাঙালিদের একটা সহজাত "আপন" করে নেওয়ার ক্ষমতা আছে! আমার এখনও মনে আছে, ২০০১ সালে পুল্লেলা গোপীচাঁদ All England জেতার পর, একটা বাংলা খবরের কাগজ ওনার coach Gangula Prasadকে বুক ফুলিয়ে, গর্বের সাথে "বাঙালি coach প্রসাদ গাঙ্গুলী" বলে চালিয়ে দিয়েছিল!


তাই নথিপত্র ঘেঁটে গবেষণা করে দেখলে, নিউটনেরও কোনও এক পূর্বপুরুষের Newtown থেকে Englandএ ব্যারিস্টারি পড়তে যাওয়ার কোনও প্রমাণ যে আমরা কোনোদিন পাবো না, সেটাই বা কে বলতে পারে! তবে হ্যাঁ, নিউটনকে নিয়ে এখনও অবধি এরকম কিছু শুনেছি বলে আমার তো অন্তত মনে পড়ছে না। 

 

অথচ দেখুন, বাঙালিদের মধ্যে যে পরিমাণ নিউটন-প্রীতি দেখা যায়, তাতে ওনাকে বাংলার ঘরের ছেলে বলে মনে হওয়াটা খুব একটা অস্বাভাবিক কি? ঠিক যেমন ইস্টবেঙ্গলের মনা, বা মোহনবাগানের বাবলু? না মানে, সে আপনি ঘরের ছেলে বলুন বা নাই বলুন, connection যে একটা ছিল সে নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ আছে কি? আমি তো এই ব্যাপারে একেবারে, যাকে বলে sanguine! (এইটা এমন একটা ইংরিজি শব্দ যেটা আমার মনে হয় ইংরেজদের থেকে বেশি বাঙালিরাই ব্যবহার করে!)

 

কেন বলছি? আচ্ছা, এই যেমন ধরুন নিউটনের গতিসূত্র। বা যেটাকে আমার মতো "ট্যাঁশ" English mediumএর ছেলেপুলেরা Newton's Laws of Motion বলেই জানে। কোনওদিন ভেবে দেখেছেন যে, এই সূত্রগুলিকে যতটা seriously আমরা বাঙালিরা নিয়েছি, ততটা বিশ্বের আর কোথাও আর কোনও জাতি নিয়েছে কিনা? এই এতো বড় দুনিয়ার অসংখ্য জাতি, প্রজাতি, উপজাতিদের মধ্যে আর কেউ কি আমাদের মতো আত্মস্থ করতে পেরেছে ওনার এই কালজয়ী গবেষণা কে? আমার তো অন্তত জানা নেই!

 

প্রথম সূত্রে উনি যে কথাটি বলেছেন - যে বাইরে থেকে বলপ্রয়োগ করে বস্তুর অবস্থার পরিবর্তনে বাধ্য না করলে, স্থির বস্তু চিরকাল স্থির অবস্থানেই থাকবে - এটার একটা গালভরা নাম আছে আমি জানি। কিন্তু সে আপনি যতই জড়তা বলুন, বা জাড্য ধর্ম বলুন, কি ইংরেজিতে Inertia of matterই বলুন না কেন, নিউটন যেটা বলতে চেয়েছেন, তার মানে তো basically দাঁড়ায় ল্যাদ! আদি, অকৃত্রিম ও নিখাদ ল্যাদের সংজ্ঞা নয় তো কি এই নিউটনের প্রথম সূত্র?


আর ল্যাদখোর বাঙালির কথা কে না জানে? আমরা বাঙালিরা যখন ভর দুপুরবেলা, এক থালা ভাত খেয়ে খাটে শুয়ে, হাতে একটা বই নিয়ে, জানলা দিয়ে বাইরে দিনের আকাশে তারা গোনার চেষ্টা করি, তার থেকে ভালো inertiaর উদাহরণ আপনার কাছে আছে? সেই position থেকে আমাদের বার করতে তো বাহ্যিক বলপ্রয়োগ জরুরি বটেই। এবার, সেই বল (force, ball নয়!) বিভিন্ন প্রকারের তো হতেই পারে। সেটা মায়ের হাতের বা স্ত্রীর হাতের গুঁতো বা ধাক্কাও হতে পারে, আবার বাড়ির পাশের তেলেভাজার দোকানে টিনের কৌটোয় তুলে রাখা চারদিনের পুরোনো তেলে ভাজা গরম গরম বেগুনির কি আলুর চপের সুগন্ধও হতে পারে!

 

এই তো আমাকেই দেখুন না, প্রায় তিন বছর পর আবার blog লিখতে বসেছি! এমন কিছু বিরাট earth-shattering কোনও কাজ তো করছিলাম না এতদিন! "এই তো কাল লিখবো", বা "আহা লিখবো, একটু ভাবতে দাও!", বা "এই তো সবে খেলাম, একটু গড়িয়ে নিই, তারপরেই লিখতে বসবো!" - এই করেই তো লেখা হয়নি। মানে basically ল্যাদ খেয়েই তো লেখা হয়ে ওঠেনি, আর কি!

 

আচ্ছা আমার কথা না হয় ছেড়ে দিন। আমি তো না হয় অনেককালের প্রবাসী। আপনি বাংলার মানুষের দিকেই একবার তাকান না। এই যে ঘটা করে পাঁচ বছর পর পর আমাদের রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নামে খুনোখুনি, লাঠালাঠি, মারামারি, হাতাহাতি, অকথা-কুকথার বন্যা, বাপবাপান্ত হয়, এর কি কোনও দরকার আছে বলুন? না মানে, এর প্রয়োজনীয়তা কি অনেক বছর আগেই ফুরিয়ে যায়নি? কারণ আমরা বাংলার মানুষ তো inertiaর মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে ঠিক করেই রেখেছি, যে যা চলছে চলতে দাও না হে বাপু! বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করে তো লাভ নেই! চেঞ্জ-ফেঞ্জ করতে গিয়ে আবার কাকে না কাকে নিয়ে-ফিয়ে আসবো! জীবনটা চলে-টলে তো যাচ্ছে মোটামুটি, ব্যাস আর কি চাই!


তাই নয় কি?


আর এর ফল কি হচ্ছে? এই যে, একবার যদি কোনও পার্টি কোনওভাবে সরকারে আসতে পারে, ওই নিউটনের বলে দেওয়া বাহ্যিক বল প্রয়োগ করেই, ব্যাস তাদের হয়ে যাচ্ছে পোয়া বারো! Minimum তিরিশ বছরের guarantee, আরও একটু বেশিও হতে পারে! সে তারা চুরি, ডাকাতি, গুন্ডামি, রাহাজানিই করুক বা কয়লা, চাকরি, গরু আর মানুষ পাচারই করুক! বা লেনিন-স্তালিন-মার্ক্স-এঙ্গেলস শুনিয়ে কল কারখানা বন্ধ করুক, তাও চলবে!

 

ছাপ্পা ভোট দিচ্ছে? দিক না, অসুবিধে কি! ঠিক করে করতে পারলে কিন্তু ওটাও একটা art, শিল্প! আর শিল্পের কদর করবে না বাঙালি, সে কি হয়? আমরা তো, after all, সংস্কৃতিমনস্ক জাত, নাকি?গা জোয়ারি করে পঞ্চায়েত ভোট করতে দিচ্ছে না? তাতে কি, ওরকম একটু আধটু করতে হয়! হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছে? ধুর কোথায়, না না, ওসব mediaর বানানো গল্প যত!

(এইজন্যেই কে যেন একজন বলেছেন খবর না দেখে সিরিয়াল দেখতে! আর আজকালকার বাংলা সিরিয়ালের কথা ... না থাক, গালিগালাজ খিস্তি-খেউড় করতে চাই না নিজের blogএ!)


তবে যা বলছিলাম, দেখতে গেলে আমাদের basically কোনও কিছুতেই কোনও অসুবিধে নেই! আমাদের মোটামুটি সকালে লুচি, দুবেলা ভাত ডাল মাছ (রোববার অবশ্য মাংসটা লাগবে), দুপুরে ভাতঘুম আর বিকেল সন্ধ্যেয় একটু "country has gone to the dogs" বলে পাড়ার মোড়ে আড্ডাটা হলেই আমরা খুশি! রাজ্যটাও যে countryরই অংশ, আর dogsদের হাত থেকে আবার মানুষদের হাতে ফিরিয়ে আনতে আমাদের কিছু করণীয় আছে কি না, সে নিয়ে আমাদের অত হেলদোল নেই।


কেন? কারণ ওই যে, ঘরের ছেলে বলে গিয়েছেন - সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে inertia!

 

আর ঠিক এই জায়গাটাতেই কিন্তু আমরা দেশের অন্যদের থেকে আলাদা, স্বতন্ত্র। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, কর্ণাটকের লোকজনকে দেখুন। এত নির্বোধ, এতটাই বোকা, যে এঁরা প্রতি কয়েকবছর পর পর সরকার বদলে দেন! মানে এ আবার কি ধরণের কথাবার্তা মশাই! মানে শুনেছি যে কে যেন বলেছেন, change is the only constant, কিন্তু তা বলে এত চেঞ্জ? তাতে হয়তো ওদের রাজ্যে একটু চাকরি বাকরি বেশি হয়েছে। হয়তো ওদের রাজ্যে IT hub, automobile hub ইত্যাদি এসব হয়েছে। তাতে কি? ব্যাস, এইটুকুই তো? তার জন্যে বারবার সরকার বদলে দেবে? যত্তসব!


এমনকি মালায়ালীরাও এই বোকাগাধাদের দলে নাম লিখিয়েছে!! এমনিতে মালায়ালীদের সঙ্গে কিন্তু আমাদের বাঙালিদের বেশ অনেক মিল! এই যেমন মার্ক্সবাদ, মাছ, ফুটবল। কিন্তু ওঁরাও মনে হয় নিউটনকে খুব একটা পছন্দ করেন না! কে জানে কেন, প্রতি পাঁচ বা দশ বছর পর পর সরকার বদলে দেন!

 

তবে, কথা বলে আশায় বাঁচে চাষা। হয়তো ওরা একদিন নিজেদের ভুল বুঝবে! হয়তো সত্যিই বাংলা আজ যা ভাবছে, বাকি দেশের মানুষ কাল সেটা ভাববে! তাতে আখেরে লাভ হবে না ক্ষতি, সেটা আমরা একবার বাংলার দিকে তাকালেই তো বুঝতে পারবো!

 

আর এই লাভ ক্ষতির অঙ্ক কষতে গেলেও কিন্তু, আবার সেই নিউটনের দ্বারস্থ হতেই হবে আমাদের।


আমরা তো জানি যে, প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান আর বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে! মানে নিউটন যেটা তৃতীয় সূত্রে বলে গিয়েছেন আর কি। তো আমরা বাঙালিরা যে অনুপ্রাণিত (inertia-দ্বারা, আপনি আবার অন্য কোনও অনুপ্রেরণার কথা ভাবলেন নাকি??) হয়ে বছরের পর বছর একই সরকার রেখে দিই, তার কি কোনও সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া হয়নি আমাদের রাজ্যে? আলবাত হয়েছে! একশোবার হয়েছে! দেখা যাক (এবং অন্য রাজ্যগুলোকে একটু দেখিয়ে দেওয়া যাক) কি!

 

এই যে আমি, ও আমার মতো লক্ষ লক্ষ বাঙালি, আজ ঘরছাড়া, প্রবাসী, এটা প্রতিক্রিয়া নয়? বাংলা ও কোলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল যে ধীরে ধীরে সেই নচিকেতার গানের বৃদ্ধাশ্রমে পরিণত হচ্ছে, সেটা প্রতিক্রিয়া নয়? কিছু দুষ্টু লোক (তাদের অনেকে শোনা যায় নাকি গুজরাত থেকে আসে ঝামেলা পাকাতে) হয়তো বলবে, বোঝানোর চেষ্টা করবে যে, রাজ্যে শিল্প নেই, চাকরি নেই বলেই আজ এই অবস্থা। বাজে কথা! ডাহা মিথ্যে কথা!


এমনটা তো হতে পারে, যে সারা দেশে তাজা বাঙালি রক্ত ছড়িয়ে দিয়ে দেশ জয়ের লক্ষেই আমাদের নেতারা এই long term plan ফেঁদে বসেছেন? যাতে রাজ্যের গন্ডি পেরিয়ে, গোটা দেশটাই একদিন বাঙালিদের বিচরণক্ষেত্র, কর্মভূমি হয়ে উঠতে পারে? এটা ভেবে দেখেছেন কি? খালি নেই-রাজ্যে থাকলে, সরকারকে খামোখা গালাগালি করলে হবে? আপনি কি মনে করেন, আমাদের নেতারা আমাদের জন্য ভাবেন না?


সারা দেশটা যেদিন বাঙালিতে ভরে যাবে, সেদিন আপনার আনন্দ হবে না? বাংলা যেদিন ভারতের জাতীয় ভাষা হয়ে উঠবে, "উরিবাবা", "আমি তুমাকে ভালোবাসে" বা "খুব ভালো" ছাড়াও যেদিন দেশের মানুষ অন্যান্য বাংলা শব্দ শিখতে বাধ্য হবে, সেদিন গর্বে আপনার বুকটা বাঁটুলের মতো ফুলে উঠবে না? এটা বাঙালিদের, আমাদের সবার, বিরাট একটা জয় হবে না?

 

শুধু আমাদের রাজ্যটাই যা চুলোয় ... সে যাক যে যাক, ওটা তো collateral damage! ওরকম তো হয়!

 

তারপর ধরুন, আমরা ছোট থেকেই শুনে এসেছি যে "খেলাধুলো করে যে গাড়ি চাপা পড়ে সে"।তা সত্ত্বেও, কেন জানি না, বিভিন্ন খেলায় একটা সময় বাংলা ও বাঙালিদের বেশ নামডাক ছিল! কিন্ত এখন তাকিয়ে দেখুন তো একবার। এককালে যে ফুটবলে বাংলার রাজত্ব ছিল, আজ বাঙালিরা আর ফুটবল খেলেই না! ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানে আজ পাহাড়ি আর অন্য রাজ্যের ছেলেদের ভিড়। জাতীয় দলেও টিমটিম করে জ্বলা একটা শুভাশীষ বোস ছাড়া আর কেউ নেই!  


টেনিসে এককালে জয়দীপ, আখতার ও পরে জিশান, লিয়েন্ডারদের মতো তারকা তোলার পর, আজ আমাদের সবথেকে বড় শত্রুও বলতে পারবে না যে টেনিসে বাংলার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল! ক্রিকেটের কথা না হয় নাই বা বললাম। ক্রিকেটে আজও, এই ২০২৪ এও, আমাদের সেরা বিজ্ঞাপন, আমাদের সবথেকে বড় তারকা দেড় দশকেরও আগে retire করা এক দাদুর বয়সী, থুড়ি, দাদার বয়সী ভদ্রলোক! বুক ক্রিকেটের বাইরে বোধহয় বাঙালিরা ক্রিকেটটাও আর খেলছে না। Global warmingএর ফলে যেভাবে গরম বেড়েছে, দোষও বা দিই কি করে!

 

In fact, কোনও খেলাতেই বাংলার ভবিষ্যৎ খুব একটা উজ্জ্বল কি? টেবিল টেনিসে সুতীর্থা, ঐহিকা আর ক্রিকেটে তিতাস, রিচার মতো কিছু হাতে গোনা ডানপিটে, অবাধ্য, বোকা ছাড়া, আপামর বাঙালি কিন্তু খেলাধুলো কে একরকম boycottই করেছে বলতে গেলে। বা, বলা ভালো, করতে বাধ্য হয়েছে দুরকমের inertiaর যৌথ প্রভাবের ফলে। এক তো ল্যাদ কাটিয়ে, রোদে বেরিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে খেলতে হবে, সেই inertia! বেকার বেকার সুস্থ শরীরকে ব্যস্ত করবো এমন আহাম্মক আমরা বাঙালিরা নই! তার উপর আমাদের inertia-অনুপ্রাণিত সরকারের হস্তক্ষেপে খেলাধুলোর যে প্রভূত অবনতি, থুড়ি, উন্নতি (বয়স হচ্ছে, কি বলতে যে কি বলে ফেলছি!) ঘটেছে গত কয়েক দশকে, তারও তো একটা effect আছে! এইগুলো যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া নয়?

 

শিক্ষার দিকেও একটু দেখুন! বাঙালিদের after all শিক্ষিত বলে তো একটা নামডাক আছে! এই যে পরীক্ষা না দিয়ে, বা কম নম্বর পেয়েই আজকাল schoolএর শিক্ষক, বা এমনকি ডাক্তার হয়ে যাওয়া যাচ্ছে, বা মানুষের হাসপাতালে যে আজকাল কুকুরের dialysis হচ্ছে এগুলো তো সব নিউটনের তৃতীয় সূত্র মেনেই, নাকি! সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া!


কুকুর যাঁরা পোষেন, তাঁদের কাছে সারমেয়রা তো পরিবারের অংশই! কুকুর বলে কি ওরা মানুষ না?আর দেখুন, পড়াশুনো করে পরীক্ষায় ভালো ফল করে তো সবাই শিক্ষক বা ডাক্তার হতে পারে। তাতে তো কোনো ক্রেডিট নেই। কিন্তু যারা অত পড়াশুনো করতে ইচ্ছুক নয়, বা ধরুন যাদের বুদ্ধিসুদ্ধি জ্ঞানগম্মি একটু কম, তারাও যে আমাদের রাজ্যে আজ শিক্ষক অথবা ডাক্তার হয়ে সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, এইটা কি কম বড় কথা?! একই পার্টি সরকারে দশ পনেরো বছরের বেশি থাকলে তবেই তো এই উন্নয়ন সম্ভব! সময় তো লাগে নাকি এইরকম সব বিরাট মাপের সামাজিক পরিবর্তন আনতে? কেরালা তামিলনাড়ুর দেখাদেখি হুটহাট করে পাঁচ দশ বছর পর সরকার বদলে দিলেই হলো? Nonsense!

 

আর এখানেই কি শেষ নাকি! আরও কত equal & opposite reaction আছে! আমরা ছোটবেলা Wren & Martin পড়ে কত গুঁতোই না খেয়েছি ইংরেজি ব্যাকরণ শিখতে! আর এখন শুনি কোন এক বাঙালির ব্যাটা, কোথাকার কোন রায়বাড়ির ছেলে নাকি Wrenকে দূর দূর করে হটিয়ে দিয়ে তাঁর জায়গা নিয়েছে। আর তার লেখা বই পড়েই নাকি দিব্যি মাধ্যমিকে ফার্স্ট সেকেন্ড থার্ড হয়ে যাওয়া যাচ্ছে! যত দেখি ততই অবাক হই, কালে কালে কি উন্নতিই না হলো! কি lucky আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম!


তাদের বড় হওয়াকে কত সহজ করে তুলছে আমাদের inertia-inspired সরকার ও নেতারা!আমরা রবীন্দ্রনাথের কবিতার অন্তর্নিহিত অর্থ খুঁজতে বা ভাব সম্প্রসারণ করতে কম হিমশিম খেয়েছি ছোটবেলা? ওদের কিন্তু সে সমস্যা নেই, কারণ ওরা যে আজকাল কবিতাবিতান আর আজব ছড়া পড়ে বাংলা ভাষাটা শিখছে, খেলতে খেলতে খেলার ছলে, ড্যাং ড্যাং করে। 


"আমরা সবাই ড্যাং ড্যাং"!

 

আর সেইজন্যেই তো, চারিদিকে এই এত কিছু দেখেই তো, তাই আমার মনে প্রশ্নটা জাগলো, যে নিউটন কি তাহলে এই বাংলারই একজন ছিলেন? কোনও যোগসূত্র কি নেই ওনার সঙ্গে আমাদের বাংলার? না মানে দেখুন, মার্ক্সবাদীরা মার্ক্সকে, মাওবাদীরা মাওকে, BJP রামকে আর তৃণমূলীরা কাটমানিকে যতটা seriously নেয়, আমরা সাধারণ বাঙালিরা কিন্তু তার থেকে অনেক অনেক বেশি seriously নিই নিউটনকে, বা বলা ভালো নিউটনের গতিসূত্রে বলা inertiaকে। ল্যাদকে!

 

ল্যাদ কিন্তু একটি আদ্যোপান্ত বাঙালি concept, মানে যাকে বলে quintessentially Bengali! বিশ্বের কোনও dictionary এর সঠিক প্রতিশব্দ দিতে পারবে না, কারণ এর তো কোনও প্রতিশব্দ হয় না! ল্যাদ আমরা বাঙালিরা উত্তরাধিকারসূত্রে পাই, ল্যাদ আমাদের রক্তে। উত্তম-সুচিত্রা, সত্যজিৎ-মৃনাল, আলুভাতে-ডিমসেদ্ধ আর ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান যতটা বাঙালি, ল্যাদও কিন্তু ঠিক ততটাই বাঙালি! বোধহয় সেই জন্যেই, মহাভারতে যুধিষ্ঠির যেরকম জুয়া খেলায় নিজের স্ত্রী-ভাইদেরও বাজি রেখেছিলেন, আমরা বাঙালিরাও সেরকম ল্যাদের জন্য সবকিছু বাজি রাখতে রাজি! আমাদের ভবিষ্যৎ, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। মায় আমাদের রাজ্যের ভবিষ্যৎ পর্যন্ত!

 

আর এই ল্যাদের সেরা বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা আমাদের দিয়ে গেছেন কে? না স্যার আইজ্যাক নিউটন! তাই বলি, কোথাও কোনও একটা আত্মিক যোগ না থাকলে, এরকমটা কি হতে পারতো?

 

আমার তো মনে হয়, গুমনামী বাবা সত্যিই নেতাজি ছিলেন কি না, এর পিছনে অনেক তো সময় নষ্ট হলো! গবেষণা হলো, সিনেমা হলো! বাংলার গবেষকদের এবার উচিত একটু নিউটনের দিকে তাকানো! একটু নিউটনের পারিবারিক ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা! বলা তো যায় না, কি খুঁড়তে কি বেরিয়ে পড়ে!  আর যদি একবার, কোনওভাবে, নিউটনের সঙ্গে বাংলার একটা যোগ বার করে ফেলা যায় (সেটা বাংলার ছেলে হতে পারে বা বাংলার জামাই! বা বাংলার ভাইপোও চলবে! ভাইপোটা কিন্তু আজকাল বাজারে হেব্বি খাচ্ছে!), তাহলে পরের ভোটে ওনার টিকিট পাওয়া আটকায় কার বাবার সাধ্যি! (শুনুন, স্বর্গত দ্বিজেন মুখুজ্যে যদি ভোটের সময় নেমে এসে ভোটটা দিয়ে যেতে পারেন, তাহলে নিউটনের ভোটে প্রার্থী হওয়া নিয়ে কোনও অসুবিধে আমি তো অন্তত দেখতে পাচ্ছি না! তা ছাড়া, প্রার্থী যেই হোক, ভোটটা তো আপনি দেবেন ... )। 

 

তবে, প্রার্থীপদ যদি নাও বা জোটে, চিন্তা কি কোই বাত নেহি হ্যায়! (এ বাবা! হিন্দি বলে ফেললাম যে? আসলে প্রবাসী তো ... ক্যাংলাপক্ষ না বাংলাপক্ষ কারা যেন আছে না? তারা কি আমার উপর খুব রেগে গেলো?)!


যাইহোক, যেটা বলছিলাম। যে বাংলার সঙ্গে যোগ যদি একটা বেরোয়, তাহলে প্রার্থী যদি নাও হন, নিদেনপক্ষে একটা বঙ্গবিভূষণ কিন্তু স্যার আইজ্যাকের কপালে বাঁধা!

 

পুনশ্চ: এখানে আপনি জিজ্ঞেস করতেই পারেন, যে নিউটনের প্রথম আর তৃতীয় সূত্র তো হলো, but what about দ্বিতীয়? সঙ্গত প্রশ্ন অবশ্যই! দেখুন আমি বোকাসোকা মানুষ, আমার মাথায় তো অত কিছু আসে না! তবে, একটা possible explanation এই সেদিন কানে এলো, কারা যেন আলোচনা করছিলো, সেটাই এখানে তুলে দিচ্ছি!

 

যে কোনো বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক, এবং বল যেদিকে ক্রিয়া করে ভরবেগের পরিবর্তনও সেদিকেই ঘটে। এইটাই তো দ্বিতীয় সূত্রের বক্তব্য?

 

ইংরেজিতে যেটাকে আমরা বলে থাকি যে Force is equal to mass times acceleration. ফর্মুলাটা লেখা হয় এরকম: F = ma.

 

কিছু দুষ্টু লোক, কি জানি বোধহয় বহিরাগতও হতে পারে, নাকি শুনলাম এরকম বলে বেড়াচ্ছে যে আমাদের রাজ্যের contextএ দেখলে, নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রের ফর্মুলাটা দাঁড়াবে এরকম:


F(uture) = ma(yer bhogey)



ree

 

Comments


Featured posts

I'm Kolkata-bred,
have lived in 8 cities across 3 countries,
and accept bribes in the form of Kolkata-style Mutton Biriyani.

Let's connect. Do drop in a line to theMakNuggets@gmail.com or send me a Twitter DM
However, the best way to grab my attention is to lead with a comment on one of my blog posts.

  • Twitter
  • Facebook
  • LinkedIn
  • Instagram
  • YouTube

©2024 by MakNuggets

It's mine, I tell you, mine! All mine! You can read it (please), quote it (thanks!), but I still own it coz it's mine! I own it, and you don't!

Also, this site doesn't use cookies. At least not intentionally. I prefer to eat cookies than using them for tracking online whereabouts of strangers!

bottom of page