[ছোটগল্প] জটায়ু কথা: জুপিটারের জলহস্তী
- Mayukh Basu
- Jun 20, 2021
- 11 min read
Updated: Jul 30, 2021
"চিনতে পারছেন? না বোধহয়?" দরজা খুলেই এই প্রশ্নে একটু থতমত খেয়ে গেলেন লালমোহনবাবু!
দুপুর ৩টের সময় কলিং বেলের আওয়াজ শুনে একটু অবাকই হয়েছিলেন। চেনাশোনা সবাই প্রায় জানে যে দিনের এই সময়টা জটায়ু একটু গড়িয়ে নিতে ভালোবাসেন। আজকেও খেয়েদেয়ে শুয়েছিলেন, কিন্তু ঘুমটা ঠিক আসছিলো না। বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছিলেন, আর মাথার মধ্যে নিজের পরের রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাসের প্লটটা নাড়াচাড়া করছিলেন।
উপন্যাসটির নাম ঠিক করেছেন "জর্জিয়ায় জলাতঙ্ক"! গল্পটা যা ভেবেছেন তাতে নিজেই বেশ একটু
উত্তেজনা অনুভব করছিলেন। জর্জিয়ায় হঠাৎ মহামারীর মতো মানুষের মধ্যে জলাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে কোনো এক রহস্যজনক কারণে, আর সেই রহস্যের সমাধান করতে ডাক পড়েছে প্রখর রুদ্রর। এইরকম নতুন প্লটের কোনো গোয়েন্দা গল্প বাংলা সাহিত্যে আর আছে কি না, অনেক ভেবেও বার করতে পারলেন না।
ঠিক যখন ভাবছিলেন গল্পটা আমেরিকার জর্জিয়া না ইউরোপের জর্জিয়া, কোথায় নিয়ে গিয়ে ফেলবেন, তখনই বেলের আওয়াজ। ভৃত্য বৈকুন্ঠ তো বোধহয় অঘোরে ঘুমোচ্ছে, অগত্যা নিজেকেই উঠে দরজা খুলতে হলো।
দরজা খুলে দেখেন পাজামা পাঞ্জাবি পরিহিত এক প্রৌঢ় দাঁড়িয়ে। চোখে মোটা ফ্রেমের হাই পাওয়ারের চশমা, গালে বেশ কয়েকদিনের না কাটা পাকা দাড়ি, কাঁধে একটা ঝোলা ব্যাগ।
লালমোহনবাবু মাথা নেড়ে জানালেন যে তিনি চিনতে পারছেন না।
ভদ্রলোক একটু হেসে বললেন, "না চেনারই কথা।"
তবে কথাটা বলে এবার ভদ্রলোক যেটা করলেন, তার জন্য লালমোহনবাবু একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না। কাঁধের ঝোলা ব্যাগ থেকে হঠাৎ কি একটা জিনিস বার করলেন ভদ্রলোক, তারপর দু আঙুলে সেটা লালমোহনবাবুর মুখের সামনে এনে বললেন, "এবার?"
ভদ্রলোককে ব্যাগে হাত দিতে দেখে একটু ঘাবড়ে দু পা পিছিয়ে গিয়েছিলেন লালমোহনবাবু। একটু ধাতস্থ হয়ে ঠিক করে তাকিয়ে দেখলেন একটি মাছের আঁশ!
"আঁশ? ইয়ে, মানে বুঝলাম না ঠিক। আপনি কি মাছ টাছ বিক্রি করতে এসেছেন? ভালো ইলিশ আছে?"
ভদ্রলোকের মুখের হাসি কিন্তু গেলো না।
"তাও পারলেন না? আচ্ছা দাঁড়ান"। বলে এবার ভদ্রলোক একবার গলা খাঁকরালেন, তারপর গলাটা বেশ চড়িয়ে শুরু করলেন বলা।
"এক ব্রহ্ম, এক সূর্য্য, এক চন্দ্র। দু হাত দু পা, দু চোখ .."
ব্যাস, আর বলতে হলো না! এবার ছবির মতো যেন চোখের সামনে সব দেখতে পেলেন লালমোহনবাবু! সব মনে পড়ে গেলো। আর অজান্তেই কখন যেন মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো, "মছলি বাবা!!"
"যাক, স্মৃতিশক্তি অত খারাপও হয়নি তার মানে", ভদ্রলোকের হাসি এবার চওড়া হলো।
"হ্যাঁ, মানে, সেই আর কি!", লালমোহনবাবু যেন কেমন একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেলেন। ঘোর কাটলো ভদ্রলোকের পরের প্রশ্নে।
"কি মশাই, ভিতরে আসতে বলবেন না?"
এইবার লালমোহনবাবু পড়লেন মহা ফ্যাসাদে! অনেকদিন পর দেখা ঠিকই, কিন্তু এককালে বিশাল যে কিছু বন্ধুত্ব ছিল সেরকম তো নয়। তার উপর, এই মানুষটির সঙ্গে শেষ যেবার দেখা হয়েছিল, বেনারসে, তখন ইনি ছিলেন দাগী আসামী। ফেলুবাবুর মগজাস্ত্রেই তো ইনি, এবং এনার গুণধর বস মগনলাল মেঘরাজ সেবার ঘায়েল হয়েছিলেন। এতদিন পর ইনি কি মতলবে এসেছেন কে জানে! সেই ঘটনার বদলা যে নিতে আসেননি সেটাই বা কে বলতে পারে!
লালমোহনবাবু দাঁড়িয়ে ভাবছেন দরজাটা বন্ধ করে ফেলুবাবুকে এক্ষুনি একটা ফোন করবেন কি না, তখনই মছলি বাবা যেন মনের কথাটা পড়ে ফেললেন।
"ভয় পাচ্ছেন?"
"হেঁহেঁ, ইয়ে মানে, হ্যাঁ। না না, মানে না। ভয় না, তবে .."
"না না, পেতেই পারেন, সেটাই স্বাভাবিক। আমাদের যখন দেখা হয়েছিল এর আগে, তখন আমি ছিলাম ক্রিমিনাল। আমার পরবর্তী জীবন সম্বন্ধে তো আপনার কোনো ধারণা নেই, তাই ভয় আপনি পেতেই পারেন।", ভদ্রলোকের কণ্ঠস্বর এখন আবার স্বাভাবিক, শান্ত।
"পরবর্তী জীবন? মানে?"
"জেল থেকে বেরোনোর পরের জীবন। সে অনেক কথা। যাইহোক, আপনাকে কোনো অস্বস্তিতে আমি ফেলতে চাইছি না, আপনি সঙ্কোচ বোধ করলে আমি ঢুকবো না, কোনো অসুবিধে নেই।"
লালমোহনবাবু যেন তাও কিছুতেই ঠিক ভরসা পেলেন না। এটা ঠিক যে বেনারসে মছলি বাবার যে রূপ ওনারা দেখেছিলেন, এখন এই ভদ্রলোক আপাতদৃষ্টিতে তার থেকে অনেকটাই শান্ত, ভদ্র, ম্রিয়মাণ। কিন্তু তাই বলে বাড়িতে ঢোকানো কি ঠিক হবে?
"ঠিক আছে, আসি তাহলে। এত বছর পর দেখা হলো, সেটাই বা কম কি?"
এইবার বেশ কিছুটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও, আর কিছুটা ভদ্রতার খাতিরেই, লালমোহনবাবু বললেন, "না না, বাবা আপনি আসুন। ভিতরে আসুন।"
ভদ্রলোককে একবারের বেশি দুবার আর বলতে হলো না।
অতএব, মছলি বাবা ভিতরে ঢুকে সোফায় বসলেন। কিন্তু ভদ্রলোককে ভিতরে এনে বসিয়েও লালমোহনবাবুর মনে ঠিক শান্তি এলো না। তারপরও চিন্তা করতে লাগলেন শোবার ঘর থেকে কুকরিটা, অথবা ব্যুমেরাংটা কি নিয়ে এসে বসা উচিত? 'আত্মরক্ষা কে লিয়ে'?
"আমি আপনার বেশি সময় নেবো না। চিন্তা করবেন না। অথবা, আপনার যদি কোথাও যাওয়ার থাকে, বলবেন, আমি সঙ্গে সঙ্গে উঠে পড়বো।"
"না না, আমি তো বাড়িতেই ...। ইয়ে, বাবা, আপনি চা খাবেন?"
"আপনি একদম ব্যস্ত হবেন না প্লিজ। আর, আরেকটা কথা, আপনি কি আমাকে বাবা বলেই ডাকবেন এখনও?"
"না মানে, আপনার নাম তো ... দাঁড়ান দাঁড়ান, বোধহয় মনে পড়ছে। আপনি তো বোধহয় বাঙালি নন, তাই না? আপনার নাম, যদ্দুর মনে পড়ে, পুরঞ্জয় কি? না, বীরেন্দর বোধহয়, তাই না?"
আবার সেই চওড়া হাসি দেখা দিলো মছলি বাবার মুখে।
"বাবা, স্মৃতিশক্তি তো এখনও প্রখর দেখছি! ব্রেনোলিয়া খান নাকি মশাই? অনেকটাই কাছাকাছি গিয়েছিলেন। হ্যাঁ, আমার নাম ছিল পুরন্দর রাউত।"
"ছিল?"
"ছিল।"
"ম-মানে?"
"ইন মাই পাস্ট লাইফ|"
"পাস্ট? আপনিও কি মশাই জাতিস্মর টাতিস্বর ...?"
"না না, ওই যে বললাম আপনাকে, আমার জেল পরবর্তী জীবনের কথা। জেল থেকে বেরিয়ে পুরো জীবনটাই বদলে গেলো, নামটাই বা এক থাকবে কেন বলুন।"
"নাম বদলে গেলো মানে? মানে নাম চেঞ্জ করানো তো বহুত ঝক্কির কাজ মশাই! আধার কার্ড, প্যান কার্ড, হ্যান কার্ড, ত্যান কার্ড, এত কিছু করালেন?"
এই কথায় এবার একটা ম্লান হাসি দেখা দিলো ভদ্রলোকের মুখে।
"এইগুলো তো একালের ব্যাপার সব। তিরিশ বছর আগে রেশন কার্ড ছাড়া আর কিছু ছিল কি?"
"তাও অবশ্য ঠিক!"
এইসব কথার ফাঁকেই লালমোহনবাবু নিজেও যেন কোন এক সময় সোফায় বসে পড়েছেন, কুকরি বা ব্যুমেরাং ছাড়াই। মছলি বাবাকে দেখে সত্যিই এখন আর আসামী বা ক্ষতিকর মনে হচ্ছে না। ভয়ও হচ্ছে না, আর তাই মনের অশান্ত ভাবটাও বেশ কিছুটা কেটেছে এরই মধ্যে।
এক ফাঁকে ভিতরে গিয়ে বৈকুন্ঠকে জাগিয়ে চায়ের অর্ডারও করে এসেছেন। তবে ভদ্রলোকের পরের কথাতেই আবার বেশ খানিকটা ধাক্কা খেলেন লালমোহনবাবু।
"তবে আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন আমি রেশন কার্ডে নাম চেঞ্জ করিয়েছি কি না, তাহলে বলবো, না করাইনি! আসলে, কোর্ট-কাছারি না করেও তো একটা পদ্ধতি আছে, নাকি?"
"ইয়ে, মানে বুঝলাম না ঠিক।"
"আচ্ছা বুঝিয়ে দিচ্ছি। আপনার নাম তো লালমোহন। এবার কাল সকালে উঠে, কোনো এক নতুন জায়গায় গিয়ে, যেখানে আপনার কোনো পরিচিতি নেই, আপনি যদি নিজেকে মোহনলাল বলতে শুরু করেন, কারুর কিছু বলার আছে কি?"
ভদ্রলোকের হাসিটা আরও চওড়া আর কিরকম যেন সন্দেহজনক হলো, বা অন্তত লালমোহনবাবুর তাই মনে হলো!
আর এই কথাতে লালমোহনবাবুর ভিতরের ভয়টাও যেন আবার চাগাড় দিয়ে উঠলো। লোকটা বলে কি? সকালে উঠে নিজে নিজের নাম চেঞ্জ করে ফেললো? এরকম তো ক্রিমিনালরা করে বলে শোনা যায়! তাছাড়া মোহনলাল শুনেই লালমোহনবাবুর মনে পড়ে গেলো মগনলালের কথা, আর ভয়টা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেলো।
ভয়ে ভয়েই জিজ্ঞেস করলেন, "মানে, ভ-ভ-ভেক নাম?"
এরকম যে ওনার আগেও হয়েছে, তা তো আমরা জানিই। ভয়ের সময় একাধিক কথা মাথার মধ্যে জোট পাকিয়ে বিপত্তি ঘটায়! যেমন এক্ষেত্রে ভুয়ো আর ফেক - এই দুইয়ের খিচুড়িতে তৈরী হলো ভেক! তবে ভদ্রলোকের প্রশ্নটা বুঝতে অসুবিধে হলো না।
"দেখুন লালমোহনবাবু। আমার নাম ছিল পুরন্দর, সেটা তো আপনিই মনে করে বললেন। আমার জন্ম বিহারের পূর্ণিয়া জেলার একটি গ্রামে, সেটাও হয়তো মনে থাকতে পারে আপনার। আমাদের সময় বার্থ সার্টিফিকেট ইত্যাদির তো খুব একটা চল ছিল না, আর গ্রামের দিকে একেবারেই না। তাই ওই জিনিসটি আমার কোনোদিনও ছিল না। পড়াশুনো করেছি ক্লাস এইট অবধি। তারপর থেকেই পেটের দায়ে ঘরছাড়া, এ কাজ ও কাজ অকাজ কুকাজ সবই করেছি। কখনো নিজের নামেই করেছি, কখনো অন্য কোনো নামে! মছলি বাবা নামটা তো আপনি জানেনই! তো, আমার নাম যে পুরন্দর, তার যখন কোনো সরকারি নথিই নেই, তাহলে আর নাম চেঞ্জ করতে কোর্টে যেতে হবে কেন বলুন? আর যাঁরা আমার ওই নামটি জানতেন, তাঁরা সবাই হয় গত হয়েছেন, নয়তো আমার সঙ্গে আর যোগযোগ নেই। কি, বোঝা গেলো এবার?"
কথাটা যে খুব ভুল বলছেন ভদ্রলোক তা হয়তো নয়। তবুও, লালমোহনবাবুর অস্বস্তিটা গেলো না। এরকম তো সচরাচর শোনা যায় না। মনে মনে ঠিক করলেন, ব্যাপারটা বিশদে জেনে ফেলুবাবুকে জানানো দরকার। লোকটাকে একটু কাল্টিভেট করার দরকার! ভুয়ো নামে কোথায় কি কাণ্ড ঘটিয়ে রেখেছে তা তো জানা নেই, ফেলুবাবু যদি খোঁজখবর নিয়ে কিছু করতে পারেন! হাইলি সাসপিশাস!
বৈকুন্ঠ চা দিয়ে গেলো, সঙ্গে একটা প্লেটে চাররকমের বিস্কুট। নিজের পেয়ালা হাতে নিয়ে, প্লেট থেকে দুটো বিস্কুট তুলে নিয়ে লালমোহনবাবু আবার কথা শুরু করলেন।
"তা, আপনি কি এখনো বেনারসেই, না ...?"
"জেল থেকে আমি ৩ বছরের মধ্যেই ছাড়া পাই। আর তারপরই বেনারস ছেড়ে চলে আসি আমি। প্রথমে পাটনায় ছিলাম কিছুদিন, তারপর আবার কলকাতায় ফিরলাম। ফিরলাম বলছি, কারণ আপনাদের সঙ্গে দেখা হবার আগেও আমি কলকাতায় ছিলাম বেশ কয়েক বছর। গড়ের মাঠে ম্যাজিক, হাতসাফাই এসব খেলা দেখাতাম।"
"ইয়ে, আপনার বাংলা শুনলে কিন্তু বোঝা যায়না একদম যে আপনি বাঙালি নন!"
"কি বলছেন! এত বছর কলকাতায় কাটিয়ে দিলাম মশাই! বিয়ে করেছি বাঙালি কে!"
মছলি বাবা বিয়ে করেছেন শুনে লালমোহনবাবু সত্যিই অবাক হলেন!
"বিয়ে? বাব্বাঃ! তা, আপনার স্ত্রী কি, মানে .. বলছি যে আপনার পাস্ট .."
"আমার পাস্টটা জানে কি না বলছেন? জানে। আমি কিন্তু ওর থেকে কিছুই লুকোইনি। পাস্ট, আমার বেনারসের কুকীর্তি, সব জেনেই কিন্তু ও আমাকে বিয়ে করেছে।"
"অ। তা কলকাতায় কি চাকরি বাকরি করতেন কিছু?"
"আসলে কি জানেন। আমি না কোনোদিন ভাবিনি জেলে যাবো। ছোটোখাটো অকাজ কুকাজ যে করেছি তা তো নিজে মুখেই স্বীকার করছি। কিন্তু কখনও জেলে যেতে হবে এটা সত্যিই ভাবিনি। মগনলালের প্রস্তাবে মূর্খের মতো হ্যাঁ বলার সময়ও না। টাকার দরকার, প্রস্তাব পেয়েছি, হ্যাঁ করে দিয়েছি। কিন্তু যখন আপনার বন্ধুর সৌজন্যে সব ফাঁস হলো, ঘোষাল বাড়ির মূর্তিটা উদ্ধার হলো, পুলিশ ধরে নিয়ে গেলো, তখন একটা বড়সড় ধাক্কা খেলাম। তাই, জেলে বসেই ঠিক করেছিলাম, কোনো অপকর্মে আর কোনোদিন জড়াবো না। কম টাকা আয় করবো তাও ঠিক আছে, কিন্তু কোনো বেআইনি কাজে আমি আর থাকবো না।"
লালমোহনবাবু শুনছিলেন বটে, কিন্তু যেন বিশ্বাস হচ্ছিলো না। দাগী আসামীর আবার বোধোদয়! গল্পে হতে পারে, বাস্তবে এরকম আবার হয় নাকি!
অবাক কাণ্ড, ভদ্রলোক আবার যেন লালমোহনবাবুর মনের কথা পড়ে ফেললেন!
একটু হেসে বললেন, "বিশ্বাস হচ্ছে না আপনার, তাই না?"
"না না, বিশ্বাস ... ইয়ে মানে, ভালো কথা তো। আপনার যে জেলে গিয়ে বোধোদয় হয়েছে, কজনের হয় বলুন!"
"অন্যদের কি হয় তা তো বলতে পারবো না, তবে আমার হয়েছিল, জানেন!"
"তা জেল থেকে বেরিয়ে কি করলেন?"
"পাটনায় কিছুদিন একটা কেরানির চাকরি। কিন্তু ভালো লাগছিলো না। তাই ছেড়ে দিলাম। তারপর একদিন বসে ভাবলাম, জানেন, যে আমি মানুষটা ঠিক কি কি করতে পারি। অনেক ভেবে দেখলাম, একটাই স্কিল আমার, সেটা হলো সাঁতার কাটা! ছোট থেকেই খুব ভালো সাঁতার কাটি আমি। আর সত্যি বলতে কি, মগনলালের কাজটাও তো আমি সাঁতার জানার জন্যই পেয়েছিলাম। "
"সাঁতার? সে তো মশাই আমিও কাটতুম এককালে। হেদোয় কম সাঁতার কেটেছি মশাই!"
"হ্যাঁ শুনেছি আমি সে কথা। আমি কিন্তু স্কুলজীবনে জেলাস্তরে অনেক প্রাইজও জিতেছি। লেগে পড়ে থাকলে হয়তো স্টেট কি ন্যাশনাল লেভেলেও যেতে পারতাম, সেই ট্যালেন্ট আমার ছিল। তবে বাড়ির সমর্থন ছিল না, তাই আর হয়ে ওঠেনি।"
"তা, কেরানির চাকরি ছেড়ে আপনি কি আবার সাঁতারে নামলেন নাকি?"
ভদ্রলোকের মুখে আবার ম্লান একটা হাসি দেখা দিলো।
"প্রতিযোগিতামূলক সাঁতারের তো আর বয়স ছিল না ততদিনে। তাই ভাবলাম যদি কমবয়সী কয়েকটা ছেলে মেয়ে তুলে আনতে পারি। প্রতিভার তো অভাব নেই এদেশে, কিন্তু সুযোগ পায় কতজন। ভাবলাম যদি আমি একজন কি দুজনকেও গড়ে নিতে পারি, তাহলেই বা কম কি বলুন? টাকা নাহয় কমই পেলাম, কিন্তু সৎপথে তো থাকবো।"
"সাঁতারের কোচ বলছেন?"
"সেরকমই আর কি। তবে বিহারে বসে তো এসব হতো না, তাই চলে এলাম আবার কলকাতায়। কলকাতায় আমার সেকেন্ড ইনিংস। সেই সময় স্পোর্টসের পীঠস্থান বলতে তো কলকাতাই বুঝতাম আমরা!"
ভদ্রলোকের কথা সত্যি মিথ্যে যাই হোক, শুনতে ভারী ইন্টারেষ্টিং লাগছিলো লালমোহনবাবুর।
"তা সুবিধে হলো কিছু এখানে এসে?"
"হলো না আর বলি কি করে বলুন। এখানে কত ক্লাব তখন! কত সাঁতারু, কি কম্পিটিশন! জাতীয় স্তরেও তখন আমাদের বাংলার আধিপত্য, একমাত্র মহারাষ্ট্র কিছুটা পাল্লা দিতে পারতো আমাদের সঙ্গে। এটা আমি বলছি আশির দশকের শুরুর দিকের কথা। আমিও লেগে পড়লাম, একটা ক্লাব আমাকে ট্রেনের হিসেবে নিযুক্তও করলো। ট্রেনার, তারপর হেড ট্রেনার। একটু নামডাকও হলো। তা ছাড়া ওই ক্লাবে কোচিং করতে করতেই লীলার সঙ্গেও দেখা। লীলা মানে লীলাবতী, আমার স্ত্রী।"
"ইয়ে একটা কথা বলি, সরি ইন্টারাপ্ট করছি। কিন্তু বলছি যে, নিজে পুকুরে কি নদীতে সাঁতার কাটা, আর কোচিং করা তো আলাদা ব্যাপার মশাই! আপনার কি কোচিং করানোর কোনো অভিজ্ঞতা ছিল আগের?"
ভদ্রলোকের আবার একটু হাসলেন।
"গোয়েন্দার সঙ্গে থেকে থেকে আপনিও বেশ চোখা চোখা প্রশ্ন করছেন দেখছি! না ঠিকই বলেছেন, অভিজ্ঞতা যে ছিল তা তো বলতে পারি না। তবে, আমি নিজেকে তৈরী করেছি।"
"কিরকম?"
"দেখুন, আমি তো নভিসদের কোচ নই। আমি জলে নেমে সাঁতারটা শেখাতাম না। আমি সুইমারদের টাইমিং ইম্প্রুভ করতে সাহায্য করি, আমি তাদের ক্রমাগত উন্নতি করতে করতে জেলা থেকে রাজ্য, রাজ্য থেকে জাতীয় স্তরে যেতে হেল্প করি। তার জন্য আমি অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নদের ভিডিও দেখেছি সারারাত। বিশ্বখ্যাত সব কোচ - ট্যালবট, কার্লাইল, গ্যালাঘার - এনাদের লেখা বই পড়াশুনো করেছি। প্র্যাক্টিসে নতুন নতুন টেকনিক আমদানি করেছি। কম খাটিনি মশাই আমি নিজেকে তৈরী করতে!"
এত সব বড় বড় নাম লালমোহনবাবু জন্মে শোনেননি, শুনে ওনার চোখ গোল গোল হয়ে গেলো! খেলাধুলোর ব্যাপারে চিরকালই জ্ঞান কম, সাঁতারে প্রাকটিস করতে যে নতুন নতুন টেকনিক লাগে তাই সেটা শুনেও বেশ অবাক হলেন।
"বাবা! করেছেন কি মশাই! তা এখনও কি কোচিং করেন? না রিটায়ার করেছেন?"
"করি, তবে এখানে নয় আর! প্রায় আট বছর হলো আমি পাঞ্জাবনিবাসী। আসলে ওই যে বললাম, সেই সময় খেলাধুলোর পীঠস্থান ছিল কলকাতা, কিন্ত এখন তো আর নেই! এত পলিটিক্স, এত নিজেদের মধ্যে রেষারেষি, এই করেই শেষ হয়ে গেলো এখানকার ক্লাবগুলো।"
"পাঞ্জাব? বাবা!"
"পাতিয়ালাতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্পোর্টস আছে, নাম শুনেছেন হয়তো, ওখানেই থাকি এখন। ওরা অনেকবার ডেকেছে, প্রথমে যেতে চাইনি জানেন! কিন্তু তারপর আর এখানে টিকতে পারলাম না। এত নোংরামি আর নিতে পারলাম না। তাই তৃতীয়বার যখন ওরা এলো, আর না বলিনি!"
ভদ্রলোকের এই পরিবর্তনের কথা শুনতে লালমোহনবাবুর বেশ লাগছিলো। তারই সঙ্গে ভদ্র্লোককেও বেশ ভালো লাগতে শুরু করেছিল। আমাদের দেশে পেটের দায়ে বিপথে চলে যাওয়া লোকের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। কিন্তু তাদের সিংহভাগই আর ক্রাইমের জগৎ ছেড়ে ফিরে আসতে পারে না। ইনি পেরেছেন! এবং শুধু পেরেছেন তাই না, উনি নিজের সাধ্যমতো দেশকে, সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করছেন। এবং ভদ্রলোকের এর জন্যে কোনো প্রশংসাই যথেষ্ট নয় বলে লালমোহনবাবুর মনে হলো। আমাদের দেশে জেলকে সংশোধনাগার কেন বলা হয়, সেটাও যেন আজ নতুন করে উপলব্ধি করলেন।
শুরুতে উনি এই ভদ্রলোককেই কিছুটা ভয় পাচ্ছিলেন, এটা ভেবে এখন একটু লজ্জাও পেলেন।
"তা, আজ কি ডাইরেক্ট পাতিয়ালা থেকে নাকি?"
"আজ্ঞে হ্যাঁ, সকালের ট্রেনেই এসেছি। একটা কাজে এসেছি এদিকেই, হাতে একটু সময় ছিল। আর শুনেছিলাম আপনি এখনও গড়পার রোডের বাড়িতেই থাকেন, তাই ভাবলাম একবার ঢুঁ মেরে যাই!"
"বেশ করেছেন! আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে, আপনার কথা শুনে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো।"
লালমোহনবাবু যখন কথাগুলো বলছেন, তারই মাঝে ভদ্রলোকের মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো। ভদ্রলোক ঝোলা ব্যাগের থেকে একটা বেশ পুরোনো ছোট্টো ফোন বার করলেন, কিন্তু ফোনটা ধরলেন না, কেটে দিলেন।
লালমোহনবাবু ওনার ফোনের দিকে তাকিয়ে আছেন দেখে ভদ্রলোক একটু হাসলেন।
"আসলে, আমি মানুষটাই খুব একটা স্মার্ট নই! আমার ফোনের আর স্মার্ট হয়ে কাজ কি বলুন। আমার জন্য এই ঠিক আছে। যাইহোক, এবার আমাকে উঠতে হবে। যে কাজে এসেছি, তার সময় হয়ে গেলো।"
ভদ্রলোক চলে যাবেন শুনে এবার লালমোহনবাবুর একটু দুঃখই হলো, দুপুরটা বেশ ভালোই কাটছিলো ওনার কথা শুনে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলেন প্রায় সাড়ে চারটে বাজে। কথায় কথায় কখন যে দেড় ঘন্টা হয়ে গিয়েছে জানতেই পারেননি।
ভদ্রলোক ইতিমধ্যে সোফা ছেড়ে উঠে সদর দরজার দিকে এগোতে শুরু করেছেন।
"কোনো সাঁতার ঘটিত কাজেই এসেছেন নাকি? হেদোর দিকে অনেককাল যাওয়া হয়না, তবে শুনেছি ওখানে এখন সেন্ট্রাল সুইমিং ক্লাব না কি একটা হয়েছে। ওখানেই যাচ্ছেন?"
জটায়ুর এই প্রশ্নে ভদ্রলোক এবার দাঁড়িয়ে পড়লেন। তারপর প্রায় পনেরো বিশ সেকেন্ড মাটির দিকে তাকিয়ে রইলেন। দেখে লালমোহনবাবুর মনে হলো উনি হয়তো কোনো দোটানায় ভুগছেন। কিছু একটা বলবেন কি বলবেন না সেই দোটানা। তবে কিছুক্ষণ ভাবনা চিন্তা করে, একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে, উনি কথাটা বলেই ফেললেন।
"আসলে কি জানেন, যে কাজে এসেছি, সেটা একেবারেই সুখের নয়। তাই বলবো কি না ভাবছিলাম। আমারই এক ছাত্রী, এককালের ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন, বেশ নামডাকও ছিল, তার এই কিছুদিন হলো একটা কঠিন রোগ ধরা পড়েছে। এখানেই একটা নার্সিং হোমে ভর্তি।"
তারপর কিছুটা যেন নিজের মনে মনেই বললেন, "এককালে কত খাটিয়েছি মেয়েটাকে। তারই ফল কি? যারা সারা জীবন ফিটনেস নিয়ে এত খেটেছে, এত পরিশ্রম করেছে, তাদের কি করে এরকম হয়, আমার ধারণার বাইরে!"
ভদ্রলোকের আসার কারণ শুনে লালমোহনবাবুর স্বাভাবিক ভাবেই খুব খারাপ লাগলো। কি যে দিনকাল পড়লো, কার কখন কি রোগ ধরে বসে, কোনো ঠিক নেই! কি বলবেন বুঝতে পারলেন না। এই অবস্থায় যে কি বলা উচিত, সাহিত্যিক হয়েও ওনার সেটা মাথায় এলো না। তাই চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন। এবং ভদ্রলোককে ওনার আসার কারণ জিজ্ঞেস করে চূড়ান্ত অবিবেচকের মতো কাজ করেছেন, এই কথাটা ভেবেও একটু বিড়ম্বনায় পড়লেন।
ভদ্রলোকই আবার কথা শুরু করলেন।
"প্রথমে আসছিলাম না জানেন। ওর হাসব্যান্ড যখন ফোন করে খবরটা দিলো, আমি আসতে রাজি হইনি। আমার মেয়ের মতো। গরীব ছিল বলে এক কালে আমার বাড়িতে রেখে আমি ওকে তৈরী করেছি। আমার নিজের তো সন্তান নেই, এই ছাত্র ছাত্রীরাই আমার সন্তান। তাকে কি করে এরকম অবস্থায় দেখবো বলুন তো?"
"কিন্তু ওর স্বামী অজিতেশ বললো ও নাকি ভীষণই ভেঙে পড়েছে। বার বার অনুরোধ করলো, সেই খেলোয়াড় জীবনে যেরকম ভোকাল টনিক দিতাম, সেরকম যদি একটু দিই এখানে এসে। ওদের স্থির বিশ্বাস, আমাকে দেখলে আর আমার কথা শুনলে ও নাকি অনেকটাই চাঙ্গা হয়ে উঠবে। আসলে এইসব রোগের, জানেনই তো, চিকিৎসা তো সেই অর্থে হয় না। তাও মেন্টাল স্ট্রেংথটা থাকলে, কিছুটা লড়াইয়ের রসদ পাওয়া যায় আর কি। তাই চলে এলাম!"
লালমোহনবাবুর সত্যিই ভীষণ দুঃখ হলো মেয়েটির জন্যে। ভদ্রলোকের ছাত্রী যখন, কতই বা বয়স হবে।
"বেশ করেছেন। না আসলেই বরং খারাপ হতো। আর হ্যাঁ, বলছি যে, ফেলুবাবুর দৌলতে এই কলকাতা শহরে মোটামুটি কিছু চেনাজানা আছে আমার। বড় বড় ডাক্তার বদ্যি, অনেককেই চিনি। কোনোভাবে যদি সাহায্য করতে পারি, জানাবেন প্লিজ।"
"অনেক ধন্যবাদ। আমি আপনার কথা ওদের জানিয়ে রাখবো। আচ্ছা এবার তাহলে আসি লালমোহনবাবু, ভিসিটিং আওয়ার সাড়ে চারটে থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে, ওরা হয়তো আমার পথ চেয়ে বসে আছে।"
কথাটা বলে ভদ্রলোক দরজা খুলে বাড়ির বাইরে বেরোতে উদ্যত হলেন। কিন্তু রাস্তায় পা রাখতেই যাবেন, এই সময় হঠাৎ লালমোহনবাবুর খেয়াল হলো যে ভদ্রলোকের নামটাই তো জানা হলো না!
"ও মশাই!"
ডাক শুনে ভদ্রলোক পিছনে ফিরলেন।
"বলছি, যে এতক্ষণ গল্প হলো, কিন্তু আপনার নামটাই তো জানা হলো না! পুরন্দর রাউত নামটি যে আপনি আর ব্যবহার করেন না, সেটা তো বুঝলাম, আপনিই বললেন। কিন্তু তাহলে আপনার নাম?"
ভদ্রলোকের মুখে আবার হাসি দেখা দিলো।
"ক্ষিতীশ সিংহ। গত প্রায় তিরিশ বছর সবাই আমাকে এই নামেই চেনে, জানে। সিংহ পদবীটা ইচ্ছে করেই নিয়েছি, জানেন। আমার জন্মস্থানের একটা ছোঁয়া অন্তত রইলো নামে। বাঙালিদের মতো বিহারেও সিনহা পদবী হয়, জানেন হয়তো।"
নামটা শোনামাত্রই লালমোহনবাবুর কিরকম যেন শোনা শোনা ঠেকলো। খবরে শুনেছেন কি? বা কাগজে পড়েছেন? কিন্তু অনেক ভেবেও কিছুতেই ঠিক প্লেস করতে পারলেন না কোথায় শুনেছেন।
ভদ্রলোক কিন্তু ম্যাজিকের মতো আবার ওনার মনের কথা পড়ে ফেললেন।
"চেনা চেনা ঠেকছে?"
"আজ্ঞে, কিন্তু কোথায় যে .."
ক্ষিতীশবাবুর হাসি চওড়া হলো।
"কমলদিঘির জুপিটার ক্লাবে এককালে কোচিং করিয়ে বেশ একটু নামডাক হয়েছিল আমার। একটু আধটু লেখালেখিও হয়েছিল আমাকে নিয়ে, মতিদার দৌলতে। মতি নন্দী। সেখানেই পড়েছেন হয়তো।"
এই কথার মধ্যেই ভদ্রলোকের ফোন আবার বেজে উঠলো। এবার আর কাটলেন না উনি, বরং ফোনটা ধরলেন। তবে ধরার আগে একবার শেষবারের মতো লালমোহনবাবুর দিকে তাকিয়ে মাথাটা নাড়লেন।
"এবার যেতেই হবে, আসি।"
বলে ক্ষিতীশবাবু ফোনটা কানে দিয়ে বাড়ির বাইরে পার্ক করা লালমোহনাবুর সবুজ মারুতি অল্টোর পাশ দিয়ে হনহন করে হাঁটা লাগালেন। ওপাশের কথা কিছু শোনা গেলো না, তবে ভদ্রলোক গলির মোড় থেকে ডানদিক ঘুরে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার আগে অবধি ক্ষিতীশবাবুর কথা কিন্তু পরিষ্কার শুনতে পেলেন লালমোহনবাবু।
"তুই এইভাবে হেরে যাচ্ছিস মা? এই শিক্ষা দিয়েছি আমি তোকে?"
তারপর এক মুহূর্ত চুপ থেকে, "ফাইট, কোনি ফাইট!"
পুনশ্চ: এই গল্পের নামকরণ স্বয়ং জটায়ুর নিজের। ক্ষিদ্দাকে জলহস্তী বলা নিয়ে আমার তীব্র আপত্তি ছিল, কিন্তু লালমোহনবাবু কথা কানে তোলেননি। বললেন, "দেখো ভায়া ময়ূখ, হস্তী যে সবসময় হাতিই হবে তার তো মানে নেই। মহান হস্তী বলে আমরা প্রায়ই সম্বোধন করে থাকি বড় বড় লোকেদের, নয় কি? সেইভাবে দেখলে, ক্ষিতীশবাবুকে আলবাত জলহস্তী বলা চলে।"
এরপর উনি এই বিষয়ে এথিনিয়াম ইনস্টিটিউশনের বৈকুন্ঠ মল্লিকের কি একটা কবিতাও চার লাইন শুনিয়েছিলেন। তাই, আমি আর কথা বাড়াইনি!

![[SATIRE] Man Wins Nobel for LinkedIn Profile; Wife Files for Divorce](https://static.wixstatic.com/media/81b957_f1ad3e6944c14fbd872b17d76624bef2~mv2.png/v1/fill/w_442,h_250,fp_0.50_0.50,q_35,blur_30,enc_avif,quality_auto/81b957_f1ad3e6944c14fbd872b17d76624bef2~mv2.webp)
![[SATIRE] Man Wins Nobel for LinkedIn Profile; Wife Files for Divorce](https://static.wixstatic.com/media/81b957_f1ad3e6944c14fbd872b17d76624bef2~mv2.png/v1/fill/w_292,h_165,fp_0.50_0.50,q_95,enc_avif,quality_auto/81b957_f1ad3e6944c14fbd872b17d76624bef2~mv2.webp)
![[ছোটগল্প] জটায়ু কথা: জুপিটারের জলহস্তী](https://static.wixstatic.com/media/81b957_6d1ac3a4f5e845cbad6a69ce5cfa8a67~mv2.jpg/v1/fill/w_442,h_250,fp_0.50_0.50,lg_1,q_30,blur_30,enc_avif,quality_auto/81b957_6d1ac3a4f5e845cbad6a69ce5cfa8a67~mv2.webp)
![[ছোটগল্প] জটায়ু কথা: জুপিটারের জলহস্তী](https://static.wixstatic.com/media/81b957_6d1ac3a4f5e845cbad6a69ce5cfa8a67~mv2.jpg/v1/fill/w_292,h_165,fp_0.50_0.50,q_90,enc_avif,quality_auto/81b957_6d1ac3a4f5e845cbad6a69ce5cfa8a67~mv2.webp)


Comments