top of page

[ছোটগল্প] ছোড়দা

Updated: Apr 8, 2020

কিছু মানুষ থাকে, লক্ষ্য করেছেন, যারা জীবনে কোনো কাজটাই ঠিক করে করতে পারে না? তাদের যে সবসময় সদিচ্ছার অভাব থাকে তা কিন্তু নয়। করতে তারা চায়, মন থেকেই চায়। কিন্তু পারে না! যে কাজেই হাত দেয় সেটাই ঘেঁটে ঘ করে দেয়! বা আজকালকার ছেলেপিলেদের ভাষায় বলতে গেলে - ছড়িয়ে ফেলে! প্রসুপ্ত দত্তগুপ্তও এরকমই একজন মানুষ। তবে গণ্ডগোল একটা প্রসুপ্তর বাবাও করেছিলেন, বেশ বড় রকমের। ছেলের নাম রাখতে গিয়ে। এত লোকে এত নাম নিয়ে এসেছিলেন। প্রসুপ্তর মামা শহরের নামজাদা বাংলা শিক্ষক, উনি কত নাম দিয়েছিলেন - অনিমিখ, অনিকেত, বিবস্বান বা ব্রতীশ! কিন্তু স্বপন দত্তগুপ্তর কোনও নামই পছন্দ হয় না। শেষমেশ হঠাৎ কি ভেবে ধাঁই করে ছেলের নাম রেখে বসলেন প্রসুপ্ত! স্কুলে প্রতিটা টিচার প্রথম প্রথম রোলকলের সময় অদ্ভুত দৃষ্টিতে দেখতো তাকে। শেষমেষ ক্লাস ফোরে একদিন নতুন বাংলার টিচার মধুপর্ণা মিস ভ্রূ কুঁচকে জিজ্ঞেস করেই ফেললেন, "প্রসুপ্ত? তার মানে তো নিদ্রামগ্ন! এটা তোমার নাম? তুমি তো ঘুমিয়েই থাকবে হে! জীবনে কিছু হবে কি করে তোমার?" বলেই এক চোট খুব হেসে নিলেন। নামটা যে প্রসুপ্ত নিজে রাখেনি, বা কারুর নাম নিয়ে হাসাহাসি করাটা যে খুব সভ্য নয়, এই নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা না করেই! তবে এই নাম প্রসুপ্তর খুব বেশিদিন টেকেনি, অন্তত সার্টিফিকেট মার্কশীটের বাইরে। ক্লাস নাইনের কথা। তখন প্রথম প্রথম কেমিস্ট্রি ক্লাসে ল্যাব শুরু হয়েছে প্রসুপ্তদের। ছেলেপিলেদের খুব উৎসাহ! একদিন ল্যাবে কি একটা এক্সপেরিমেন্টে কোনো এক কেমিকাল গরম করার কথা, সবাই নিজের নিজের বুনসেন বার্নারের কাছে কাজে ব্যস্ত। এরই মধ্যে হঠাৎ একটি মেয়ে দেখতে পেলো একটা বার্নার এর গ্যাস পাইপে কি করে যেন ফুটো হয়ে গেছে! দেখেই চিৎকার করে উঠলো মেয়েটা, "গ্যাস লীক!!" ব্যাস, হুড়োহুড়ি দৌড়োদৌড়ি শুরু হয়ে গেলো ক্লাসে। টিচার কিছু করে ওঠার আগেই যে যেদিকে পারে দিলো ছুট। কিন্তু তারই মধ্যে প্রসুপ্ত চিৎকার করে বললো, "আমি ঠিক করছি, চিন্তা নেই", বলেই ছুট্টে গেলো বার্নারটার কাছে। কেমিস্ট্রি টিচার অরুণ স্যার ভাবলেন ছেলেটা বুঝি বুদ্ধি করে ওই বার্নারের গ্যাস সুইচটা অফ করে দেবে। কিন্তু চাপের মাথায় প্রসুপ্ত করলো ঠিক উল্টো! ধাঁই করে বার্নারের পাইপটা টেনে খুলে দিলো সে! ব্যাস, আর যায় কোথায়! পাইপ থেকে সেই গ্যাস ছড়িয়ে পড়লো সারা ল্যাবে, সঙ্গে সঙ্গে দাউদাউ করে জলে উঠলো সমস্ত বার্নার! শেষ পর্যন্ত অরুণ স্যার পড়ি কি মরি করে দৌড়ে গিয়ে ইমার্জেন্সি গ্যাস সুইচটা অফ করায় সে যাত্ৰায় কোনোক্রমে বেশি ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গিয়েছিলো! এর আগেও প্রসুপ্ত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় গন্ডগোল যে পাকায়নি তা নয়। তবে এই ঘটনার পরই সহপাঠীরা ওর নাম রাখলো ছোড়দা! ছড়ানোর ক্ষমতা থেকে ছড়ু দা, ও তার অপভ্রংশে ছোড়দা! এরপর থেকে স্কুলে তাকে সবাই ছোড়দা বলেই ডাকতো। সিনিয়র হোক বা জুনিয়র। কোনো বড়দা, মেজদা, সেজদা না থাকলেও সে হয়ে গিয়েছিলো সবার ছোড়দা! প্রসুপ্তও কিছু মনে করতো না। তার চেহারাটাও ছিল গোলগাল, সর্বদা হাসিমুখ, আর ব্যবহারও ছিল ভারী মিষ্টি। সে সকলের সঙ্গেই ভালোভাবে কথা বলতো, ছোড়দা ডাকে হাসিমুখে সাড়াও দিতো। কিন্তু বাকিরা তাকে নিযে মস্করা করেই সময় কাটিয়ে দিতো। ল্যাবের ওই ঘটনায় কেমিস্ট্রি নিয়ে মনের মধ্যে যে ভয়টা প্রসুপ্তর ঢুকে যায়, সেটা আর কোনোদিন যায়নি। মাধ্যমিকে টেনেটুনে পাস করে গেলেও, ইলেভেনে সে আটর্স নিয়ে ভর্তি হয় ও পরবর্তীকালে বাংলায় এম.এ করে। মা বাবার অমতেই। প্রসুপ্তর বাবা সত্তর আশির দশকে রঙের বা পেইন্টসের ব্যবসা করে বেশ মোটা টাকা আয় করেছেন। বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে ওনার বিশাল তিনতলা বাড়ি। মনেপ্রাণে চাইতেন ছেলে পৈতৃক ব্যবসা দেখবে, আরও বড় করে তুলবে। আর পেইন্ট মানেই তো কেমিক্যাল। তাই ছেলের আর্টস পড়ায় সম্মতি ছিল না তাঁর। কেমিস্ট্রি না পড়লে কেমিক্যালের ব্যবসা বুঝবে কি করে! তবে একমাত্র ছেলের গোঁ আর মাধ্যমিকের মার্কশীটে কেমিস্ট্রির করুণ দশা দেখে আর বেশি বারণও করতে পারেননি। কিন্তু কোনো কাজ করতে গিয়ে গণ্ডগোল পাকিয়ে ফেলা ছিল প্রসুপ্তর সহজাত, তাই স্কুল কলেজের গন্ডি পেরোনোর পরেও সেটা পিছু ছাড়লো না। প্রসুপ্ত তখন সবে এম.এ পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে বসে, বাবার রঙের ব্যবসায় তার কোনো উৎসাহ নেই সে আগেই জানিয়ে গিয়েছে বাড়িতে। স্বপনবাবু বললেন, "এবার তো তাহলে একটা চাকরিবাকরি করার দরকার।" নিজের বড় ব্যবসা থাকার ফলে স্বপনবাবুর নেটওয়ার্ক ছিল বেশ বড়। উনিই নিজের বন্ধু সাধন দত্ত কে বলে একটা চাকরি পাইয়ে দিলেন। সাধনবাবুর অনেক রকমের ব্যবসা ছিল, ময়দানে একটা ফুটবল ক্লাবও ছিল। তবে সেইসময় উনি নিজের একটি খবরের কাগজ খোলার কথা ভাবছিলেন। সেখানেই উনি প্রসুপ্তকে চাকরি অফার করলেন। প্রসুপ্তর সাংবাদিকতার কোনো অভিজ্ঞতা নেই শুনে বললেন, "আরে তুমি হলে আমার বন্ধুর ছেলে! তুমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে খবর জোগাড় করে বেড়াবে কেন! তুমি বাংলায় এম.এ তো? তুমি হবে আমার এডিটর, আমার সম্পাদক! আজকালকার ছোঁড়াদের যা দেখি, কদ্দুর বাংলা লিখতে পড়তে পারে আমার সন্দেহ আছে, কি ছাইপাঁশ লিখবে কে জানে! তুমি মাথার উপর থাকলে একটু শান্তি পাবো! তবে দেখো বাবা, সবে শুরু করছি, কর্মচারী তো বেশি না, তাই আপাতত কয়েক মাস তোমাকে সবই দেখতে হবে - লেখালেখি, সম্পাদনা, ছাপানো সব।" মহানন্দে লেগে পড়লো প্রসুপ্ত। সদিচ্ছার অভাব তার কোনোদিনই ছিল না, আর কাজটাও বেশ ভালো লাগছিল তার। 'দৈনিক সুখবর' এর প্রথম সংস্করণ বেরোনোর দিন যত এগিয়ে আসে, প্রসুপ্তর উত্তেজনা তত তুঙ্গে ওঠে, বাড়ে ব্যস্ততাও। সাধনবাবুর টাকার অভাব নেই, তাই ভালোই খরচ করেছেন প্রচারে, কাগজের প্রমোশনে। সাড়াও মিলেছে বেশ ভালো। সময়টা নব্বই দশকের শেষের দিকে, তখন আস্তে আস্তে ডটকমের আধিপত্য বাড়ছে ঠিকই , তবে সে সবই প্রায় ইংরেজিতে। বাংলা লিখতে তখনও পেন লাগে, কীবোর্ড না। তাই প্রথম প্রকাশের আগেই বেশ কিছু পাঠক সাবস্ক্রাইবও করে ফেললো এই নতুন কাগজ। শেষ পর্যন্ত এসে গেলো সেই দিন। নিজের সৃষ্টি নিজের হাতে নিয়ে পড়ার আগ্রহে প্রসুপ্তর সারারাত ঘুম হয়নি! কিন্তু কাগজটা হাতে পাওয়া মাত্রই 'দৈনিক সুখবর' মুহূর্তের মধ্যে হয়ে দাঁড়ালো চরম দুঃসংবাদ! এতো খাটাখাটনি, হাজার প্রচেষ্টার পরও দেখা গেলো কাগজের প্রথম পাতায় বড় অক্ষরে হেডলাইন লেখা: প্রবল ধর্ষণে শহর পরিশ্রান্ত এর নীচেই যদিও বৃষ্টিভেজা শহরের একটা ছবি ছিল, যেটা দেখে পাঠকদের বুঝতে অসুবিধে হলো না যে কথাটা হবে বর্ষণ। কিন্তু সাধনবাবু ভারী মুষড়ে পড়লেন। প্রথম দিনই এরকম ভুল, এ তো এক মহা বিপর্যয়! মুষড়ে যে প্রসুপ্তও পড়েনি তা না, তবু এরই মধ্যে মনকে শক্ত করে সে বললো, "সাধনকাকু, চিন্তা করবেন না। কালকের কাগজে প্রথম পাতায় বড় করে সংশোধনী ছেপে দেব, সব ঠিক হয়ে যাবে। লোকে বুঝবে এটা প্রিন্টিংয়ের ভুল, হতেই পারে।" কিন্তু পরের দিন সংশোধনী ছাপতে গিয়ে ঘটলো আরেক বিপর্যয়। প্রিন্টিং মেশিন আবার করলো বেগড়বাই, প আর ছ গেলো উল্টে। লেখাটা দাঁড়ালো: সংশোধনী: গতকালের খবরের পাছায় ভুল ছিল! এরপর আর ছোড়দাকে বরখাস্ত করা ছাড়া সাধন দত্তর কিছু করার ছিল না। তবুও তিনি প্রসুপ্তকে ডেকে বললেন, "তুমি বাবা ছেলে ভালো। আর হবে নাই বা কেন, স্বপনের ছেলে তুমি! তবে এই কাজটা হয়তো তোমার জন্যে ঠিক ছিল না। চিন্তা করো না, ঠিক অন্য কিছু একটা পেয়ে যাবে।" কাজের অভাব কোনোদিনই ছোড়দার হয়নি। তবে কোনো কাজেই বেশিদিন টিকেও থাকতে পারেনি। তবে শুধু স্কুল বা কর্মক্ষেত্রেই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও এই ছড়িয়ে ফেলার স্বভাবের জন্যে প্রসুপ্ত সুখী হতে পারেনি। 'দৈনিক সুখবর'এ কাজ করার সময়েই আলাপ হয়েছিল সাহানার সঙ্গে। পরে আলাপ থেকে প্রেম, প্রেম থেকে বিয়ে। সাহানা আইটি জগতের মেয়ে, রাজারহাটে একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতো। আয়ও ছিল প্রসুপ্তর থেকে বেশি! তবু কেন কে জানে তার প্রসুপ্তকে ভারী ভালো লেগে গিয়েছিলো। ভীষণ সরল মনে হয়েছিল ছেলেটাকে। যেটাকে অন্য সবাই ছড়ানো বলতো, যেটা নিয়ে হাসাহাসি করতো, সেই জিনিসগুলোই বিয়ের আগে সাহানার ভীষণ মিষ্টি লেগেছিলো। বিয়ের পরও এক বছর কেটেছিলো বেশ আনন্দে। কিন্তু বিপত্তিটা ঘটলো, সপরিবার বান্দিপুর জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে। সাহানা বাবার একমাত্র মেয়ে, মা নেই। বান্দিপুর ট্যুরে প্রসুপ্তর মা বাবা তো ছিলেনই, সাহানার বাবা ব্রজেশবাবুও সঙ্গে ছিলেন। জঙ্গলে বাঘের দেখা না মিললেও, সবাইকে নিয়ে বেশ হৈহট্টগোল করে ভালোই কাটছিলো দিন। এরই মধ্যে একদিন, রাতের অন্ধকারে প্রসুপ্তদের ইনোভা গাড়ি চলছিল জঙ্গলের রাস্তায়। প্রসুপ্ত সামনে বসে ড্রাইভার এর পাশে, মাঝের সিটে প্রসুপ্তর মা বাবা আর পিছনে সাহানা ও ব্রজেশবাবু । খাবার জলের বোতলটা রাখা ছিল সামনে, ব্রজেশবাবুর তেষ্টা পাওয়ায় উনি জামাইয়ের কাছে সেটা চাইলেন। জঙ্গলের রাস্তায় গাড়ির ভিতরের আলো জ্বালানো যাবে না, তাই অন্ধকারের মধ্যেই হাতড়ে প্রসুপ্ত বোতলটা বার করে পিছনে পাঠিয়ে দিলো।


এদিকে, এইসব জঙ্গলের রাস্তায় অনেকসময় পেট্রোল পাম্প পাওয়া যায় না বলে, ড্রাইভাররা প্রায়ই মিনারেল ওয়াটারের বোতলে পেট্রোল ভরে রেখে দেয়, ইমার্জেন্সিতে যদি দরকার পড়ে তাই। ঘটনাচক্রে পেট্রোলের বোতলটা রাখা ছিল জলের বোতলের ঠিক পিছনেই, আর রাতের অন্ধকারে হাতড়ে ওটাই প্রসুপ্তর হাতে পড়েছিল। ফলে যা হবার তাই হলো, তেষ্টার মাথায় ছিপি খুলেই ঢকঢক করে বেশ খানিকটা পেট্রোল খেয়ে ফেললেন ব্রজেশবাবু! আর খেয়েই সে কি চিৎকার ওনার! শেষপর্যন্ত ঝড়ের গতিতে ৮০ কিলোমিটার দূরে মাইসোর শহরের এক হাসপাতালে গিয়ে সেই রাতেই পেট ফ্লাশ করিয়ে তবে সে যাত্রায় শান্তি পেলেন শ্বশুরমশাই। কিন্তু এই ঘটনার পর সাহানা আর থাকতে চাইলো না প্রসুপ্তর সাথে। কোনো এক অদ্ভুত কারণে তার মনে সন্দেহ জন্মেছিলো যে যা ঘটেছিলো তা ইচ্ছাকৃত, অর্থাৎ ছোড়দা জেনে শুনে পেট্রোল খেতে দিয়েছিলো শ্বশুরমশাইকে! হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়েও, শত প্রচেষ্টাতেও সাহানার ধারণা বদলানো গেল না। কোর্টকাছারি করে ডিভোর্স হয়নি ঠিকই, কিন্তু সেই থেকে সাহানা ডানলপে নিজের বাবার বাড়িতেই থাকে। তবে নিজের মা বাবার মৃত্যুর পর আর কোলকাতায় থাকেনি ছোড়দা। যে শহরে তার কোনো পরিবার নেই, বিশেষ বন্ধু নেই, সবাই তাকে নিয়ে মজা করে, বলার মতো কোনো চাকরিও নেই, সেখানে থাকার কোনো যুক্তি খুঁজে পায়নি প্রসুপ্ত। এই শহর তাকে কোনোদিন বোঝার চেষ্টা করেনি। মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করার পরও, জান লড়িয়ে দেবার পরও যখন কোনো কাজে সাফল্য আসেনা, তা সে যে কারণেই হোক, তখন তার মনের অবস্থা কি হয় কেউ জানার চেষ্টা করেনি। যে মানুষটাকে প্রসুপ্ত মন দিয়ে ভালোবেসেছিলো, একটা গুরুতর কিন্তু অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্যে সে তাকে এতো বড় শাস্তি কেন দিলো আজও প্রসুপ্ত জানে না। সে কাজ করতে গিয়ে অকাজ করে ফেলে অনেক সময় সেটা ঠিকই, কিন্তু ইচ্ছে বা চেষ্টার অভাব তো সে রাখে না। কিন্তু চারপাশে সবাই তাকে নিয়ে শুধু হাসাহাসি করেছে, হাসির খোরাক বানিয়েছে চিরকাল। অকর্মণ্য বলেছে, অকর্মার ঢেঁকি বলেছে, নাম দিয়েছে ছোড়দা। স্বপনবাবু বুঝেছিলেন ছেলে আর যাই করুক, ব্যবসাটা তার হবে না। তাই বেঁচে থাকতে থাকতেই উনি রংয়ের ব্যবসাটা বেচে দিয়েছিলেন এশিয়ান পেইন্টসকে। বাকি ছিল শুধু পৈতৃক তিনতলা বাড়িটা। প্রসুপ্ত তিনতলাটা নিজের জন্যে তালা দিয়ে রেখে, বাকি বাড়িতে ভাড়াটে বসিয়েছে শহর ছাড়ার আগে। কারুরই তার সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ নেই। ভাড়াটাও সে অনলাইন ট্রান্সফার এর মাধ্যমে নেয়, খুব দরকার না পড়লে ভাড়াটেদের ঘাঁটায়না। একমাত্র সাহানার সঙ্গে কালেভদ্রে হোয়াটস্যাপে কথা হয়। তাই কেউই সঠিক খবর দিতে পারেনা প্রসুপ্তর। ছেলেবেলার সহপাঠীরা মাঝেমধ্যে ফেসবুকে খুঁজে দেখে বটে, তবে তাদের অনেকেরই প্রসুপ্তর নামও মনে নেই আজ, তারা ছোড়দা বলেই অভ্যস্ত। তাই সে কোথায়, কি করে কারুরই জানা নেই। তবে শোনা যায়, ছোড়দা আজকাল মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহরের ধানতোলিতে বেঙ্গলি এসোসিয়েশনের স্কুলে বাংলা পড়ায়।


এই গল্পটি www.storymirror.com এই ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়েছে। পড়ার জন্য এখানে click করুন।

ree

Comments


Featured posts

I'm Kolkata-bred,
have lived in 8 cities across 3 countries,
and accept bribes in the form of Kolkata-style Mutton Biriyani.

Let's connect. Do drop in a line to theMakNuggets@gmail.com or send me a Twitter DM
However, the best way to grab my attention is to lead with a comment on one of my blog posts.

  • Twitter
  • Facebook
  • LinkedIn
  • Instagram
  • YouTube

©2024 by MakNuggets

It's mine, I tell you, mine! All mine! You can read it (please), quote it (thanks!), but I still own it coz it's mine! I own it, and you don't!

Also, this site doesn't use cookies. At least not intentionally. I prefer to eat cookies than using them for tracking online whereabouts of strangers!

bottom of page